পরিবর্তন_Written By mblanc [প্রথম পর্ব - ১.৩ সন্দেহ]

🔗 Original Chapter Link: https://chotiheaven.blogspot.com/2015/11/written-by-mblanc_57.html

🕰️ Posted on November 9, 2015 by ✍️ mblanc

📖 603 words / 3 min read


Parent
পরিবর্তন Written By mblanc প্রথম পর্ব  ।। ১.৩ ।। সন্দেহ আমার জুনিয়রদের মধ্যে আমার সবচেয়ে পছন্দ পিনাকী আর সুজাতাকে। দুজনেই ব্রিলিয়ান্ট, অথচ কোনো গর্ব নেই তাতে। ব্যাবহারেও সুন্দর, চেহারাও সুন্দর। দুটিকে রাজযোটক লাগে। আর মনে হয় দুজনের মধ্যে কিছু ইন্টুমিন্টু আছে, প্রায়শই কাজ না থাকলে দেখি দুটো মাথা এক হয়ে কীসব ফুসফুস-গুজগুজ চলছে। ভাল লাগে। নিজের তো সে বয়েসে তেমন কিছু হয়ে ওঠেনি - তাই একটু হিংসেও হয় বৈকি। তবে নাথিং সীরিয়াস। এখন সুজাতা নিজের মাইক্রোস্কোপ ছেড়ে উঠে এসে বললে, "কি ব্যাপার স্যার? আপনার তো সচরাচর দেরি হয় না... সব ভাল তো?" একটু আগে দীপালি একদম এই কথাটাই জিগ্যেস করেছিল, জিভের ডগায় উত্তরও চলে এসেছিল। এখন কি বলব? সুজাতার নম্রসুন্দর মুখখানির দিকে তাকিয়ে রইলাম।  - "স্যার? স্যার, কিছু প্রবলেম?" পিনাকীও উঠে এসেছে। মাথাটা সামান্য ঝাঁকিয়ে প্রফেশনাল মোডে নিয়ে এলাম নিজেকে। "না না, সব ঠিক আছে। হ্যাঁ, সুজাতা, তুমি… কালকের ওই ইলেক্ট্রলাইসিসটা শেষ করেছ? গুড, তার অ্যানালিসিসটা বের করে ফেল গিয়ে যাও। আর অভিলাষ আর প্রিয়াঙ্কাকে বল আজকের অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে যেতে।"  - "আর পিনাকী, তুমি এখন কি করছিলে? … না, ওটা আপাততঃ বন্ধ রাখো, পেট্রিডিশ গুলো ডিপফ্রীজ করে দাও, আর তারপর একটু ইন্টারনেটটা ঘেঁটে একটা রিপোর্ট আমাকে বের করে দাও দেখি।"  - "হাইভারডিন কম্পোজিশন তো? সেটা কাল রাতেই বাড়িতে বসে করে ফেলেছি স্যার। নিয়ে আসব?"  - "ও তোমাকেই হাইভারডিনটা করতে দেয়া ছিল, না? তা বেশ করেছ, গুড জব, কিন্তু ওটা আমার একটু পরে হলেও চলবে। এখন অন্য একটা জিনিস চাই। ড. এ জি জেনিংসের নাম তো জান, ওনার কলেজ লাইফ আর আমাদের কোম্পানির সাথে ওনার কোনো কাজ হয়েছে কি না, হলে তার ডিটেলস এই সব নিয়ে একটা ব্রিফ করে দাও।"  - "ওকে স্যার।" দুজনের চোখেই অস্বস্তির ছায়া দেখলাম, কিন্তু আর কথা না বলে তারা পা বাড়াল।  - "ও হ্যাঁ, আমি আমার ডেন-এ একটু ব্যস্ত থাকব। সবাইকে বলে দাও যেন এমার্জেন্সি না হলে বিরক্ত না করে।" ল্যাবের লাগোয়া বাথরুম, ফ্রীজার, ওভারনাইট রুম, আইসো-চেম্বার ইত্যাদি ছাড়াও একটা বড় ঘর আছে, যেটা হেড সায়েন্টিস্ট-এর অফিস কাম মিনি-ল্যাব হিসেবে ব্যবহার হয়। সেখানেই গিয়ে নিজের ডেস্ক-এ বসলাম। মাথাটা এখনো ভার আছে, কিন্তু কী করা যাবে আর। আগের কাজ আগে - আপডেট রিপোর্ট আর একটা অ্যাপোলজি লেটার, ঠিক যেমনটি দীপালি বলেছিল, বানাতে শুরু করলাম। আধখানা কাজ হয়েছে, রিংরিংরিংরিংরিংরিং। মোবাইল তুলে দেখলাম, আমার পেয়ারের বৌ ফোন করছেন।  - "হ্যালো, তোমাকে বলেছিনা ল্যাবে আমাকে ফোন না করতে?"  - "কেন, কচিকচি জুনিয়রদের সাথে গল্পে বাধা পড়ে যাচ্ছে বুঝি? সব তো ডবকা ছুঁড়িগুলো কাজ করে দেখেচি। কি কাজ বুঝিনা? রিসার্চ আর এগোবে কী করে!"  - "কি চাই কি তোমার?" খেঁকিয়ে উঠলাম। "আর লোক পাও নি জ্বালাবার? একেবারে দেশলাই জ্বেলে ধরিয়ে দাও না কেন, ঝামেলা চুকে যায়!"  - "আমি বেরচ্ছি, এক বান্ধবীর বাড়িতে যেতে হবে। চাবি রইল গীতাবউদির কাছে। ফিরতে রাত হতে পারে, যদি হয় তো খেয়েই ফিরব।" এটা নতুন নয় আমার কাছে। বেশ কয়েক বার এরকম হয়েছে, আমি গা করিনি। আজ কেন জানি ভেতরের সংসারী পুরুষটা মাথা তুলল।  - "কোথায়, কোন বান্ধবীর বাড়িতে যেতে হবে? আর ফিরতে রাতই বা হবে কেন? কি এমন এমার্জেন্সি? সকালেও তো কই শুনি নি।"  - "জেনে তোমার কী? আমরা দুটি-তিনটি মেয়ে একটু নিজেদের মত টাইমপাস করব, তারও অধিকার নেই? জানো, তোমার পাশের বাড়ির রাজীবের বউএর কী স্বাধীনতা? ও এমনকী -"  - "জাহান্নমে যাও! আমার কিছু জানার দরকার নেই!" আরো কিছু চেঁচাচ্ছিল, কিন্তু ফোনটা কেটে দিলাম। আপডেট রিপোর্টটা শেষ করে অন্য কাজে হাত দিতে চেষ্টা করলাম, কিন্তু বার বার অনুর কথাই মাথায় আসতে লাগল। এক বান্ধবীর বাড়িতে যেতে হবে.... একটু নিজেদের মত টাইমপাস করব.... কোন মেয়ে ভরদুপুর থেকে রাত অবধি সংসারী মহিলাদের সাথে টাইমপাস করে? টাইমপাস মানেই বা কি? আর ওর যে রকম স্বভাব, এক সুনন্দাদি আর ওর নিজের মা-বোন ছাড়া আর কোনো মেয়ের সাথে বেশিক্ষন কথা চলতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি না - আমাকে এর আগে বেশ কয়েকবার প্যাঁক খেতে হয়েছে, নরম-গরম মিলিয়ে। কে এমন বান্ধবী আছে ওর?
Parent