চাঁদের অন্ধকার_Written By Tumi_je_amar [শেষের কথা (চ্যাপ্টার ০১ - চ্যাপ্টার ০২)]

🔗 Original Chapter Link: https://chotiheaven.blogspot.com/2015/11/written-by-tumijeamar_62.html

🕰️ Posted on November 23, 2015 by ✍️ Tumi_je_amar

📖 1022 words / 5 min read


Parent
চাঁদের অন্ধকার Written By Tumi_je_amar শেষের কথা (০১) ২৬ বছর আগে আমি মিঃ সরকারের কাছে এই পর্যন্ত শুনেছিলাম। উনি অবশ্যই এতো বিশদ ভাবে বলেন নি। ডাঃ সুধীর রাওয়ের বাড়ির আর গ্রামের যৌনতা নিয়ে কিছু কথা বলেছিলেন। এর পর ১৯৯২ সাল থেকে ২০০০ সালের মধ্যে আমি অন্ধ্রপ্রদেশের অনেক জায়গাতেই ঘুরেছি। সেইসময় ওখানকার কিছু গ্রামের বাসিন্দাদের জীবন ধারা যা দেখেছি তার অনেকটাই আমি এই গল্পে মিশিয়ে দিয়েছি। আমি গত বছর মানে ২০১৩ সালে প্রায় এক বছর হায়দ্রাবাদে ছিলাম। সেই সময় খোঁজ খবর নিয়ে একদিন সেই রাইডান্ডি গ্রাম যাই। এখনও বেশ ছোট জায়গা। একটু খোঁজ করতেই দেখা পেয়ে যাই আমাদের ডাঃ সুধীর রাও আর মায়িলের। অবশ্যই আমি ওঁদের ওনাদের আসল নাম নিয়েই খুঁজেছিলাম। আমি ওই গ্রামে পৌঁছে ঘটনা চক্রে অখিলের সাথেই প্রথম দেখা হয়। তখনও আমি জানতাম যে ও অখিল। আমি অখিলকে ডাঃ সুধীর রাওয়ের নাম বলতে ও আমাকে ওনার বাড়িতে নিয়ে যায়। তখন সকাল ১১ টা বাজে। ডাঃ রাও আর মায়িল বসে চা খাচ্ছিলেন। দুজনেরই বয়েস ৬০ হয়ে গেছে। ডাঃ সুধীর রাওয়ের চেহারা অনেকটাই ভেঙে গিয়েছিলো। কিন্তু মায়িলকে দেখে বোঝা যায় উনি কিরকম সুন্দরি ছিলেন। একদম দুধে আলতা গায়ের রঙ, পেটানো শরীর। চুলে একটু সাদা রঙের ছোঁয়া লাগলেও ফিগার একদম টানটান। সেভাবে দেখলে এখনও অনেকে ওনার প্রেমে পড়ে যাবে। আমি নমস্কার বলতে ডাঃ রাও অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকেন। কিছুক্ষণ পরে বলেন যে উনি আমাকে চিনতে পাড়ছেন না। আমি আমার পরিচয় দেই। কিন্তু সেই পরিচয় জেনেও ওনার পক্ষে আমাকে চেনা সম্ভব ছিল না। আমি – আপনার সাথে আমার কয়েকবার দেখা হয়েছিল ১৯৮৮ সালে মায়িল – তখন তো উনি রাঁচিতে ছিলেন আমি – ওনার সাথে আমার সেখানেই দেখা হয়েছিলো ডাঃ সুধীর রাও – আমার কিছু মনে পড়ছে না আমি – না পড়াটাই স্বাভাবিক। আমি তখন মোদি জেরক্সের ইঞ্জিনিয়ার ছিলাম। মিঃ সরকারের কাছে যেতাম ওনার ফটোকপিয়ার সারাতে। সেই সময় আপনার সাথে দেখা হয়েছিলো। ডাঃ সুধীর রাও – আর আপনি আমাকে একটা মার্লবোরো সিগারেট খাইয়ে ছিলেন আমি – হ্যাঁ, সেই সামান্য কথা এতদিন পরেও আপনার মনে আছে। ডাঃ সুধীর রাও – সেই সময় একঘেয়ে জীবন কাটতো। মনে রাখার মত ঘটনা খুব কমই ঘটতো। তাই মনে থেকে গেছে। আপনি আমাকে জেরক্সের থিওরিও বলেছিলেন। এখন অবশ্য সেই থিওরি আর মনে নেই। আমি ভাবতেও পারিনি ডাঃ সুধীর রাও আমাকে চিনতে না পারলেও সেই কয়েকদিনের ঘটনা এতদিন পরেও মনে রাখবেন। এরপর উনি জিজ্ঞাসা করেন যে আমি ওনাকে কি করে খুঁজে বের করলাম। আর মায়িল আমার খুঁজে বের করার কারণ জানতে চান। আমি ওনাদের জানাই যে আমি কিভাবে ওনাদের কথা মিঃ সরকারের কাছ থকে শুনেছিলাম। আমি এটাও বলি যে অনেক অনুরোধ আর উপরোধের পরেই মিঃ সরকার নিয়মের বাইরে গিয়ে আমাকে সব বলেছেন। ডাঃ সুধীর রাও – ঠিক আছে, এতে আমরা কিছু মনে করছি না। উনি বলেছিলেন বলেই এতদিন পর আপনার সাথে দেখা হল। আমি – আপনাদের কথা জানার পরে খুব ইচ্ছা হয়েছিলো মায়িল দিদির সাথে দেখা করবার। আর পরে ইচ্ছা হয়েছিলো আপনি কেমন আছেন সেটা জানার। মায়িল – আমার সাথে দেখা করার ইচ্ছা হয়েছিলো কেন? আমি – আপনাকে প্রনাম করবো বলে। আপনার মত মহিলার কথা বাস্তবে খুব কমই শুনেছি। মায়িল – আমি এমন কিছু মহিলা নই। সাধারণ একজন ডাক্তার আর এই সুধীরের বৌ। আমি – আমি ইঞ্জিনিয়ার মানুষ। ভাষা দিয়ে বোঝাতে পারবো না যে কেন আপনাকে ভালো লেগেছে বা শ্রদ্ধা করি। শুধু এইটুকুই বলি যে আপনার মত ভালোবাসা গল্পে পড়েছি। সত্যি জীবনে এই একবারই দেখলাম। মায়িল – আমি কিছু বুঝি না ভাই। আমি – যে মহান সে নিজের মহত্ব কোনদিন বুঝতে পারে না। তার কাছে ওইটাই সাধারণ ঘটনা। মায়িল – বেশ সুন্দর কথা বল তুমি। আমি – আমার পিনুরাম নামে এক বন্ধু আছে। সে হলে আরও ভালো ভাবে বোঝাতে পারতো। মায়িল – তাই নাকি! আমি – দিদি একটা অনুরোধ আছে মায়িল – কি বল ভাই আমি – আপনাকে একটু ছুঁয়ে দেখতে চাই আর একবার প্রনাম করবো। মায়িল – না না প্রনাম করবে না। আমার খুব লজ্জা লাগবে। আমি – দিদি আমি আপনাদের থেক সাত বা আট বছরের ছোট। মায়িল – তাও প্রনাম করো না। তুমি বরং আমার কাছে এসো, তোমাকে একবার জড়িয়ে ধরি। আমি – সেটা কি ভালো হবে! মায়িল – তুমি তো সব জানো। আমার এই বুকে কত লোকের কামনার ছোঁয়া লেগেছে। আর সেখানে এক ভায়ের শ্রদ্ধার আর ভালবাসার ছোঁয়া লাগলে কি হবে। এই বলে মায়িল দিদি উঠে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরেন। ওনার চোখ ছল ছল করে ওঠে। আমি ওনার দিকে জিজ্ঞাসার চোখে তাকাতে উনি বলেন যে উনি ভাবতেও পারেন না কোন অজানা লোক ওদের এতো ভালবাসতে পারে। আমি ওনার কাছে অনুমতি নেই ওনাদের কথা গল্পের মত করে লিখতে। ডাঃ সুধীর রাও হাসিমুখে আমাকে অনুমতি দেন। শেষের কথা (০২) এরপর ডাঃ সুধীর রাও আর মায়িল দিদির সাথে অনেক কথা হয়। সামাজিক বিয়ে হয়েছিলো কিনা জিজ্ঞাসা করাতে ডাঃ সুধীর রাও বলেন যে ওনাদের সেটা আর দরকার হয়নি। ওনাদের সাথে তিন ঘণ্টা সময় কাটিয়ে ঘটনার মোটামুটি একটা টাইম লাইন বানাই।  ডাঃ সুধীর রাও আর মায়িলের জন্ম – ১৯৫২ ডাঃ সুধীর রাও ডাক্তারি পড়তে যান - ১৯৭৪ গণেশ রাও আর কঞ্জরি দেবীর মৃত্যু – ১৯৮০ কানিমলি আর চন্দ্রান ধরা পড়ে – ১৯৮৩ ডাঃ সুধীর রাও মানসিক ভারসাম্য হারান – ১৯৮৪ ডাঃ সুধীর রাও রাঁচিতে ভর্তি হন – ১৯৮৫ আমার সাথে ডাঃ সুধীর রাওয়ের প্রথম দেখা হয় – ১৯৮৮ ডাঃ সুধীর রাও সুস্থ হয়ে গ্রামে ফেরেন – ২০০৫ এর মধ্যে ওনাদের ছেলে অর্জুন ঘরে আসে। মায়িল দিদির ইচ্ছা অনুযায়ী ও কৃষিবিদ হয়েছে। এগ্রিকালচারে মাস্টার ডিগ্রি করে গ্রামেই থাকে। ওদের নিজেদের জমি আর আসে পাশের সবার চাষবাস কিভাবে আরও উন্নত করা যায় সেই নিয়ে কাজ করছে। কানিমলি আর চন্দ্রান জেল থেকে ছাড়া পেলেও গ্রামের লোক ওদের ওখানে থাকতে দেয়নি। ওদের ছেলেরা বাবা মাকে অন্য কোথাও রেখে দিয়েছে। একটাই ভালো যে কানিমলির ছেলেরা ওদের ফেলে দেয়নি। যতটা সম্ভব বাবা মায়ের খেয়াল রাখে। এরপর আমি ডাঃ সুধীর রাও আর মায়িল দিদির সাথে ওদের বাড়ির ছাদে যাই। গণেশ রাও আর কঞ্জরি দেবীর সমাধি দেখতে। ওনাদের সমাধিতে মাথা ঠেকিয়ে প্রনাম করি। চলে আসার আগে আমি ওনাদের কাছে সেই পাথরটা দেখতে চাই। মায়িল দিদি আমাকে ওঁর পুজার ঘরে নিয়ে যান। একটা রুপোর সিংহাসনে কাঁচ দিয়ে ঘেরা সাধারণ দেখতে একটা কালচে পাথর। ওনাদের জীবনে সেটাই ভগবান। এরপর মায়িল দিদির হাতে পেসারাট্টু খেয়ে ফিরে আসি। মায়িল দিদি কানিমলির কাছ থেকে ওই একটা জিনিসই শিখেছিল। তখন সানি, মানি, অখিল, নিখিল আর কিন্নরীর সাথেও দেখা হয়। উর্বশীর বিয়ে হয়ে গেছে অনেক আগে। ওরা রামাগুন্ডমে থাকে। ওদের ছেলে আর মেয়ে দুজনেই ডাক্তার। ছেলে রাইডান্ডিতে থাকে আর গ্রামের সেবা করে। সবাই বার বার বলেন আবার যাবার জন্যে। জানিনা আর কোনদিন ওনাদের সাথে দেখা হবে কিনা। ***********সমাপ্ত***********
Parent